কেমন লাগবে হঠাৎ যদি ঘুম ভেঙে আবিষ্কার করেন আপনি ছাড়া আশেপাশে আর কোন মানুষ দেখা যাচ্ছে না। আর কিছুক্ষণ পরই বুঝতে পারলেন, আশেপাশের পরিচিত-অপরিচিত সবাই পরিণত হয়েছে জোম্বিতে! বাড়ি ফিরে গিয়ে দেখলেন, আপনার স্ত্রী-সন্তান নেই সেখানে। তারা বেঁচে আছে না মরে গেছে কিছুই জানা নেই আপনার! কী করবেন তখন?
ঠিক এমনই একটা কাহিনি দিয়ে শুরু আমাদের অতি পরিচিত আর ভীষণ জনপ্রিয় টিভি সিরিজ ‘দ্য ওয়াকিং ডেড’এর। নাম থেকেই অবশ্য আঁচ করা যায় সিরিজটা কোন ঘরানার। বিখ্যাত আমেরিকান নেটওয়ার্ক AMC এর ব্যানারে নির্মিত এই হরর-ড্রামা জনরার সিরিজটি মূলত একই নামের কমিক বুক সিরিজের উপর ভিত্তি করে টিভির পর্দায় এসেছে, আর জয় করে নিয়েছে হাজার দর্শকের মন।
৩১ অক্টোবর, ২০১০ থেকে প্রচারিত হওয়া ‘দ্য ওয়াকিং ডেড’ এর মোট আটটি সিজনে সর্বমোট একশো সাতটি এপিসোড অন এয়ার হয়েছে। প্রথম থেকেই জনপ্রিয় সিরিজটি নিজের জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে পেরেছে এর শেষ পর্যন্ত। তাই IMDB তে ১০ এর মধ্যে ৮.৪ আর রটেন টমেটোতে ৮০% রেটিংস নিয়ে সবচেয়ে জনপ্রিয় হরর সিরিজগুলোর তালিকায় প্রথম বা দ্বিতীয়তে ‘দ্য ওয়াকিং ডেড’ এর নাম উঠে আসবেই।
কাহিনির শুরুতে দেখা যায়, সিরিজের মূল চরিত্র রিক গ্রাইমস কোমা থেকে জেগে নিজেকে আবিষ্কার করে ভিন্ন এক জগতে। যে জগতের সাথে আগের কিছুই মেলানো সম্ভব না। রাস্তায় পড়ে আছে শয়ে শয়ে বীভৎস লাশ আর যারা বেঁচে আছে তারাও সেই লাশের চাইতে কম বীভৎস নয়! জীবন্ত লাশগুলো হাঁটছে, চলছে আর সত্যিকারের জ্যান্ত কাউকে দেখতে পেলেই ঝাঁপিয়ে পড়ছে তার উপর- আর আক্রমণের শিকার মানুষগুলোও পরিণত হচ্ছে নতুন আরও জীবন্ত লাশে! স্ত্রী-সন্তানের খোঁজে মরিয়া রিক একলাই বেরিয়ে পড়ল এই ভয়াবহ পৃথিবীতে। আবিষ্কার করল, আরও মানুষ বেঁচে আছে তার মতো। একসময় ফিরে পেল তার পরিবারকেও, একটা ছোটখাট দল হয়ে গেল তাদের- আর এক সময়ের ডেপুটি শেরিফ রিক হলো সেই দলের নেতা। শুধু কি জোম্বিই তাদের একমাত্র শত্রু? বেঁচে থাকার পথের একমাত্র বাঁধা? নাকি আরও অনেক বাঁধার সম্মুখীন হতে হবে তাদের? নিষ্ঠুর নিয়তির কাছে কি শেষ পর্যন্ত হার মানবে রিক? দলনেতা হিসেবে কি ব্যর্থ হবে সে?
পুরো সিরিজটা জুড়েই টান টান উত্তেজনা বজায় রাখতে সমর্থ হয়েছেন এর পরিচালকরা, বিশেষ করে প্রথম সিজনের পরিচালক ফ্র্যাংক ড্যারাবন্ট, যার ঝুলিতে ‘দ্য শশাঙ্ক রিডেম্পশন’ আর ‘দ্য গ্রিন মাইল’ এর মতো বিখ্যাত সিনেমা পরিচালনার অভিজ্ঞতা রয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতেও এই ধারা বজায় রাখতে পেরেছেন তার সতীর্থরা, যার প্রমাণ সিরিজটার আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তা।