উপজাতি সমাজের জনগণ পূজা ও দৈনন্দিন কাজে ব্যবহূত বিভিন্ন প্রকার চারু ও কারুশিল্প তৈরি করে। প্রতিটি উপজাতি সম্প্রদায়ের জনগণ ভিন্ন ভিন্ন চারু ও কারুশিল্প তৈরি করে। পবিত্র বস্ত্রসামগ্রী এবং এর বুনন কৌশলের কারণেই হাতে তৈরিকৃত ধর্মীয় দ্রব্যসামগ্রী হিসেবে এগুলোর মূল্য প্রদান করেছে। হাতে তৈরি কাপড়, প্রাকৃতিক রং, প্রাচীন তাঁত, এবং গুপ্ত ধর্মীয় অনুষ্ঠান বাংলাদেশের উপজাতি সম্প্রদায়ের বস্ত্রশিল্পের অন্যন্যতা প্রদান করেছে। প্রতিটি উপজাতি তাদের নিজস্ব চারু ও কারুশিল্প তৈরি করে যা তাদের পূজা অর্চনায় ব্যবহার করা হয়।
আদিবাসী সমাজের জনগণ প্রকৃতি থেকে ধারনা নিয়ে বিশেষ ধরনের অলঙ্কার ও অন্যান্য শিল্প সামগ্রীর আকার ও নকশা তৈরি করে। মাকড়সার জালের মতো কানের দুলকে ‘মাকড়’ এবং বৃশ্চিকের পায়ের মতো শত জোড়া বিশিষ্ট রূপার তারের কোমর বন্ধকে ‘বিচ্ছু’ বলে। হাজার বছর পূর্বে আসাম, তিববত, বর্মা ও মঙ্গোলিয়ার বংশোদ্ভূত উপজাতি সম্প্রদায়ের আগমনের ফলে এখানকার নকশায় বৈচিত্র্য লাভ করেছে। এসব কাজে পূর্বাঞ্চলীয় শিল্পের বিশিষ্টতা থাকলেও কোনোটিতেই প্রতীক বা ধর্মীয় গুরুত্বের অভাব নেই।
বালি
নাগফুল (নাক ফুল) নাক সাজাবার জন্য বা পাশের নাকের ছিদ্রে ব্যবহূত এক প্রকার অলঙ্কার বিশেষ। এর আকৃতি ক্ষুদ্র তারকার মতো।
সোনার নাকফুল/সোনা নথ বাম দিকের নাকের ছিদ্রতে ব্যবহার্য বোতাম সদৃশ গুলিকা বা ঘন্টির মতো এক প্রকার অলঙ্কার বিশেষ। এর আকৃতি বিভিন্ন প্রকার ফুল বা জ্যামিতিক আকৃতির হয়ে থাকে। কানের শেষপ্রান্তে ছিদ্র করা স্থানে ব্যবহূত এক প্রকার কানের অলঙ্কার। এর আকৃতি সাধারণ আংটির মতো হয়ে থাকে।
কানের দুল উপমহাদেশের সর্বত্র ব্যবহূত সাধারণ কানের অলঙ্কারের মতো। এটি ছিদ্র করা অংশে বা হুক দিয়ে কানে ঝুলিয়ে রাখা হয়।
হাজা ফুল ফুলের পাপড়ি সদৃশ কানের দুল। এটি একটি স্ক্রু বা পুশ দিয়ে কানে ঝুলিয়ে রাখা হয়।
কান ফুল তারা আকৃতির এক ধরণের কানের অলঙ্কার যা কানের ছিদ্র করা স্থানে পরিধান করা হয়।
ঝুংগা উপমহাদেশীয় ঝুমকা সদৃশ। এর আকৃতি ঘন্টার মতো, তবে ঝুলন্ত ছোট ছোট বল থাকতে পারে, নাও থাকতে পারে। এই অলঙ্কার কানে ঝুলিয়ে পড়তে হয়।